/ চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তব্য দেন হাছান মাহমুদ /
২৪খবরবিডি: 'তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপি মনে করেছে, সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভীত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছে সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করেছে।'
'সামনে উপনির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কী ভুলটি তারা করেছেন।' সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুউল আলম হানিফ। হাছান মাহমুদ বলেন, 'আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এমন শক্ত ভীতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, কেউ ধাক্কা দিলে সেই নিচে পড়ে যায়। কঠিন দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেয়ালের যেমন কিছু হয় না, উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই ব্যথা পায়। তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে।' তিনি বলেন, 'বিএনপি বলেছিল, সরকারের পতন ঘটাবে। ১০ তারিখের পর থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। তারা সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়ে দিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে।' আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপি বলেছিল ১০ ডিসেম্বর তাদের এক দফা দাবি। আর সমাবেশে তারা দিলো ১০ দফা দাবি। তাদের দাবিগুলো, মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। দাবিগুলো ঘোড়ার ডিমের মতোই দশটা ঘোড়ার ডিম, নতুন কোনও কিছু সেখানে নাই। এক দফা থেকে এখন ১০ দফায় গেছে। গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতোই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলে গোলাপবাগ মাঠে করেছে।'
'তিনি বলেন, '১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অনেক হিসেব নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিল। ঘোষণা দিয়েছিলেন ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেশ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেলো ১৫টি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোঁটা। তার মানে হচ্ছে, তারা আসলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন।'
'সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে বিএনপির এমপিদের পদত্যাগে, বেশি কিছু হয়নি'
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, '৭ তারিখ থেকে সমাবেশ শুরু করে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করলো। যখন সরকার কঠোর হলো তখন আবার বসলেন, তারা বেছে নিলেন গোলাপবাগ মাঠ। সেখানে চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটের মতো গরুর হাট বসে। এত মাঠ থাকতে তারা বেছে নিলেন গরুর হাট। এই মাঠে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ ধরে। আশপাশের রাস্তা মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ করলেন তারা।'
'মন্ত্রী আরও বলেন, 'আজকে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৯২তম, অথচ পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়। বাংলাদেশে এখন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ সহজে দেখা যায় না, আকাশ থেকে কুঁড়েঘর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। এটিই হচ্ছে, বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোনও জাদুর কারণে হয়নি, শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে এভাবে বাংলাদেশ বদলে গেছে। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।'